সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন
শিবচর প্রতিনিধি : পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরে ইমাদ পরিবহনের যাত্রীবাহি একটি বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ে ১৯ জন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগেরই মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে ৭ জনই গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার। বাসের চাকা ফেটে অথবা দ্রæতগতির কারনে দূর্ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে পুলিশ ধারনা করছে।
পুলিশ, স্থানীয় ও আহত যাত্রীরা সুত্রে জানায়, রবিবার ভোররাতে খুলনা থেকে যাত্রী বোঝাই করে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৫-৩৩৪৮) ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাসটি গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে ১৫ জন যাত্রী তুলে। পদ্মাসেতুর আগে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর সিমানা এলাকায় আসলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। বাসটি এক্সপ্রেস হাইওয়ের নীচের আন্ডারপাসের গাইড ওয়ালের সাথে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হয়। এ দূর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে নেয়ার পর আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন গোপালগঞ্জ গোপিনাথপুর এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে হেদায়েত মিয়া, বনগ্রাম এলাকার শামসুল শেখের ছেলে মোসতাক আহম্মেদ, সদর উপজেলার নশর আলী শেখের ছেলে সজীব শেখ, পাচুরিয়া এলাকার মাসুদ হোসেনের মেয়ে সুইটি আক্তার, টুঙ্গিপাড়ার কাঞ্চন শেখের ছেলে করিম শেখ, সদর উপজেলার আবু হেনা মোস্তফার মেয়ে আফসানা মিমি, মোকসেদপুর এলাকার আমজেদ আলীর ছেলে মাসুদ আলী,খুলনা সোনাডাঙা এলাকার শেখ মোহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুলাহ আল মামুন, খুলনা সাউথ মেন্টাল রোড এলাকার চিত্ত রঞ্জন ঘোষের ছেলে চিন্ময় প্রসুন ঘোষ, ডুমুরিয়া এলাকার পরিমল সাদু খায়ের ছেলে মহাদেব কুমার সাদু খা, আমতলা এলাকার শাহজাহান মোলার ছেলে আশফাকুর জাহান লিংকন, বাগেরহাট জেলার শান্তি রঞ্জন মজুমদারের ছেলে অনাদি মজুমদার, ফরিদপুর হিদাডাঙ্গা এলাকার সৈয়দ মুরাদ আলীর ছেলে মো. ইসমাইল, নড়াইল লোহাগড়া এলাকার বকু শিকদারের ছেলে ফরহাদ শিকদার, পাবনা সুজানগর এলাকার গহর আলীর ছেলে ইউসুপ আলী, বাসের চালক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলী আকবরের ছেলে জাহিদ হাসান ও বাস ড্রাইভারের সহকারী মো. মিরাজ।
স্থানীয় দোকানী আবুল হোসেন বলেন, সকালে দোকান খুলতেই বিকট শব্দে চেয়ে দেখি। বাসটি হাইওয়ে থেকে পড়ে গেল ।
আরেক স্থানীয় ইউসুফ মিয়া বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে উন্নতমানে মহাসড়ক নির্মান করলেও পরিবহন শ্রমিকরা এটা বুঝে না। এরা এই মহাসড়কে ১শ২০ থেকে দেড় শ কিলোমিটার স্পীডে গাড়ি চালায়। এতে ঝূকি বেড়ে মানুষ মরছে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক কর্মকর্তা ডাঃ মিঠুন বিশ^াস বলেন, নিহতদের বেশিরভাগেরই মাথায় আঘাতের চিহৃ দেখা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাজীবুল ইসলাম বলেন, নিহতদের পরিবারগুলোকে ২৫ হাজার করে অনুদান দেয়া হয়েছে।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার মো: মাসুদ আলম বলেন, সামনের চাকা ফেটে বা দ্রæতগতির কারনে এ দূর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, এঘটনায় ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতেমাদারীপুর অতিরিক্ত জেলাম্যাজিস্ট্রেট পল্লব কুমারহাজরাকে প্রধানকরে ৪ সদস্য বিশিষ্টতদন্তকমিটিগঠনকরাহয়েছে।
অপরসদস্যরাহলেনমাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশসুপার মনিরুজ্জামান ফকির(পিপিএম), বুয়েটেরসহকারীঅধ্যাপকশাহনেওয়াজহাসানাত-ই-রাব্বি, মাদারীপুরবিআরটিএরসহকারীপরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হোসেন। আগামী ২কর্ম দিবসেরমধ্যে তদন্তপ্রতিবেদন দেওয়ারজন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।