সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
শিবচর : বরগুনার আমতলীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মাদারীপুরের শিবচরের একই পরিবারের নিহত ৭ জনের দাফন শেষ হয়েছে। রবিবার সকাল ১০ টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। এসময় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সেই সাথে দোষীদের তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবী করা হয়। এর আগে শনিবার মধরাতে বরগুনা থেকে নিহতদের লাশগুলো বাড়িতে এসে পৌছালে স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৭০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এই মর্মান্তিক নিহতদের ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বরগুনার আমতলিতে বোনের মেয়ে হুমায়রার বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা থেকে যায় শিবচরের ভদ্রাসনের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, তার স্ত্রী টেলিটক চাকুরীজীবি মুন্নী বেগম (৪০), ২ মেয়ে তাহিয়া (৭), তাসফিহা (১১)। এর আগে বুধবার শিবচরের একই ইউনিয়নের সাহাপাড়া গ্রামের বোন ফরিদা বেগম (৪০), ভাবী ফাতেমা বেগম (৪০), ২ ভাগ্নে মাহাবুব খান, সোহেল খান, তার স্ত্রী রাইতি (৩০), রাইতির মা রুমি বেগমসহ (৪০) পরিবারের সদস্যরা ও আত্মীয় স্বজন ওই অনুষ্ঠানে যায়। শুক্রবার বিয়েতে সবাই অংশ নেয়। শনিবার এদেরসহ আত্মীয় স্বজন নিয়ে বৌভাতে অংশ নিতে যাওয়ার পথে দুপুরে বরগুনা জেলার আমতলী এলাকার হলদিয়া-চাওড়া সীমান্তবর্তী চাওড়া হলদিয়া খালের ওপর লোহার ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস পানিতে পড়ে যায়। এতে ব্যাংকার আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী মুন্নী বেগম, দুই মেয়ে তাহিয়া, তাসফিহা তার বড় ভাই বাবুল মাদবরের স্ত্রী ফাতেমা বেগম, বোন ফরিদা বেগম, ফরিদা বেগমের ছেলে সোহেল খানের স্ত্রী রাইতি বেগম, রাইতির মা রুমি বেগম নিহত হয়। এদের সবার বাড়ি ভদ্রাসনের সাহাপাড়া ও চরপাড়া গ্রামে।
২ সন্তান ও স্ত্রী হারানো ব্যাংকার আবুল কালাম আজাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুর্ঘটনার পর সবার টনক নড়ে। এরআগে যদি ব্যবস্থা নেয়া হতো আমাদের এত বড় ক্ষতি হতো না। আমাদের সিস্টেমে পরিবর্তন আনতে হবে।
ভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রহিম বেপারী বলেন, আমার জীবনে এক সাথে একই পরিবারের সাত জনের মৃত্যু প্রথম দেখলাম। এটা খুবই দু:খজনক। আমরা এলাকাবাসী খুবই মর্মাহত। যে ব্রীজটি ভেঙ্গে এই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে এটা প্রশাসনের গাফিলতি ছিল বলে আমি মনে করি। এঘটনায় যাদের কর্তব্যে অবহেলা ছিল সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমি তাদের শাস্তির দাবী করছি।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় একই পরিবারের ৭ জন নিহতের ঘটনা আসলে খুবই দু:খজনক। আমরা নিহতদের দাফন কাফনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দশ হাজার টাকা করে মোট সত্ত্বর হাজার টাকা দিয়ে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।