সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০১ পূর্বাহ্ন
মাদারীপুর প্রতিনিধি: বিশ্ব শিক্ষক দিবস-২০২৪ এ মাদারীপুর জেলায় কলেজ পর্যায়ে গুণি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন মাদারীপুরের সরকারি রাজৈর কলেজের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক নিত্যানন্দ হালদার। তিনি শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪ এ মাদারীপুর জেলায় কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষকও নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গুণি শিক্ষক হিসাবে নিত্যানন্দ হালদারের হাতে সনদপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোছাঃ ইয়াসমিন আক্তার। শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪ উপলক্ষে জেলায় কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক হিসাবে জেলা শিক্ষা অফিস থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।নিত্যানন্দ হালদার ১৯৯৬ সালের ৭ আগস্ট মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী রাজৈর ডিগ্রি কলেজে সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদান করেন। তিনি বিনয়ী,সদাহাস্যোজ্জল,সদালাপী ও একজন সাদামনের মানবিক মানুষ। তিনি সরকারি রাজৈর কলেজের শিক্ষার্থীদের একজন প্রিয় শিক্ষক হিসাবে সুনাম সুখ্যাতি কুড়িয়েছেন। তিনি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম সুরেন্দ্রনাথ হালদার,মায়ের নাম তুলি হালদার। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।তিনি মামাবাড়ী রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের চৌরাশী গ্রামে পাঠশালায় তালপাতায় আক্ষরিক জ্ঞান অর্জন করেন। এরপর তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন তার নিজ গ্রামের ৬৫নং নয়াকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাজিতপুর রাজকুমার এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউশন থেকে ১৯৮১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন।
১৯৮৪ সালে মাদারীপুর সরকারী নাজিমউদ্দিন কলেজ(বর্তমান মাদারীপুর সরকারি কলেজ) থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে দ্বিতীয় বিভাগ অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সরকারী নাজিমউদ্দিন কলেজ(বর্তমান মাদারীপুর সরকারি কলেজ) থেকে স্নাতক শ্রেণিতে দ্বিতীয় বিভাগ নিয়ে পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃত বিষয়ে ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে ১৯৯১ সালে মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের কেডিবিএম উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৯৫ সালে রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর ছইফউদ্দিন মহাবিদ্যালয়ে সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদান করেন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৬ সালের ৭ আগস্ট মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী রাজৈর ডিগ্রি কলেজে সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদান করে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখার পাশাপাশি ১৯৯১ সাল থেকে সংবাদপত্র জগতে প্রবেশ করেন।তিনি দৈনিক কালবেলা,দৈনিক আজকের কাগজ,দৈনিক লাল সবুজ,দৈনিক সকালের খবর,দৈনিক মাতৃভূমি,দৈনিক সংবাদ,দি ডেইলি স্টার,দৈনিক শিক্ষা,এফএম রেডিও টুডে,রেডিও ধ্বণি,দৈনিক খোলা কাগজ,দৈনিক শিক্ষা,শিক্ষাতথ্য ও বাংলাদেশ সময় পত্রিকায় মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেছেন।বর্তমানে তিনি বৈশাখী টেলিভিশন ও দৈনিক ভোরের আকাশ পত্রিকায় মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করছেন। সাংবাদিকতায় তিনি একাধিকবার প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন। তিনি সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় তাকে বিভিন্ন সংগঠন থেকে এ্যায়ার্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি মাদারীপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের উপর অনুসন্ধ্যানী প্রতিবেদন লিখে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন।এছাড়াও তিনি তার ছোট বেলা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার দেখা ও কষ্টের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে আমার ছোটবেলা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছেন। যা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।তিনি ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যার সময় তার নিজ ইউনিয়নের বনার্ত মানুষদেরকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মানবতার ফেরিওয়ালা হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি মানুষের দুঃখ কষ্টের উপর অসংখ্য কবিতা ও গান লিখেছেন। তিনি সাংবাদিকতায় অনুসন্ধ্যানী ও সরেজমিন রিপোর্ট করে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি একখানা সহজ সরল সামাজিক নাটক মায়ের কৃপা রচনা করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন।