মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২২ পূর্বাহ্ন

নোটিশঃ-
রাজৈর নিউজ অনলাইন পত্রিকার পক্ষ থেকে আপনাদের স্বাগতম। নিত্যনতুন সকল সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।ফেসবুক পেইজ থেকে আমাদের নিউজে চোখ রাখুন:- https://www.facebook.com/rajoirnews  তাছাড়া সংবাদ এর ভিডিও দেখুন ইউটিউব থেকে  BanglaNews Tube
সর্বশেষ সংবাদঃ-
প্রশ্নের জালে আটকে সাংবাদিককে টাকার প্রস্তাব: মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে হামলা-ভাংচুর, আহত-১, গরুসহ ৩০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগ রাজৈরে এক মেয়েকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত-১১ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ডাকাত দলের ১৩ সদস্য গ্রেপ্তার, ট্রাক উদ্ধার মাদারীপুরের ৫উপজেলায় ৪৪১টি মন্ডপে চলছে পূজার প্রস্তুতি, ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা ইতালিতে ব্যাগের মধ্যে থেকে বাংলাদেশি যুবকের টুকরো মরদেহ উদ্ধার, গ্রামে শোকের মাতম মাদারীপুরে প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ২ জন গ্রেপ্তার রাজৈরে পৌরসভা ও শিক্ষা অফিসের কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান একই সঙ্গে কুরআনের হাফেজ হলেন ইতালির নাগরিক দুই ভাই মাদারীপুরের রাজৈরে হোটেল ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার রাজৈরে জমির বিরোধ নিয়ে  পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
৭৮ দিন পর তিউনিশিয়ার ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির লাশ দেশে ফিরেছে, রাজৈর ও মুকসুদপুরে নিজ নিজ বাড়িতে দাফন সম্পন্ন

৭৮ দিন পর তিউনিশিয়ার ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির লাশ দেশে ফিরেছে, রাজৈর ও মুকসুদপুরে নিজ নিজ বাড়িতে দাফন সম্পন্ন

0

বিনয় জোয়ারদারঃ তিউনিসিয়া থেকে ৭৮ দিন পর দেশে এসেছে ৮ বাংলাদেশির লাশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের কফিন ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌছে। বিমান বন্দর থানায় মামলা থাকায় লাশগুলো ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার বিকালে ৮টি লাশের কফিন স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয় । শুক্রবার সন্ধ্যায় মাদারীপুর জেলার রাজৈর ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার নিজ নিজ বাড়িতে কফিন পৌছলে পরিবার, প্রতিবেশী ও স্বজনদের মাঝে শুরু হয় শোকের মাতম। এলাকার শত শত শোকাহত স্বজনরা নিহতদের এক নজর দেখার জন্য তাদের বাড়িতে ভিড় জমায় । পরে ধর্মীয় রীতি শেষে ৮ জনের লাশ দাফন করা হয়। বৃহস্পতিবার লাশ আসার খবরে রাজৈর ও মুকসুদপুরের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় দাফনের প্রস্তুতি। কবর খোড়াসহ সকল প্রস্তুতি নেয় পরিবারের স্বজনেরা।

স্বজনরা জানান, চলতি বছর ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর ও মুকসুদপুরের বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এক মাস পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি দালালরা বিভিন্ন দেশের ৫২ যুবককে লিবিয়া থেকে ইতালীর উদ্দেশ্যে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তুলে দেয়। তিউনিসিয়ার উপকূলে ভুমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে আগুন ধরে যায়। ওই সময় ভুমধ্যসাগরে ডুবে যায় নৌকাটি। এতে ৯ যুবক নিহত হয়। নিহতরা হলেন, রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান কাজীর ছেলে সজীব কাজী (১৯), খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ (২২), একই ইউনিয়নের সেনদিয়ার গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী (২২), কদমবাড়ির ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (২৪), কবিরাজপুর ইউনিয়নের কেশরদিয়া গ্রামের কাওসার হোসেন (২২) এবং গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউয়িনের বড়দিয়া গ্রামের দাদন মিয়ার ছেলে রিফাদ (২১), দিগনগর ইউনিয়নের ফতেহপট্টি এলাকার মো. রাসেল (২০) ও গয়লাকান্দি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন (২২)। দুর্ঘটনায় আরো এক পাকিস্তানী যুবক মারা যায়। তিউনিশিয়ার উপকুল থেকে ৪৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করে সে দেশের কোস্টগার্ড। এদের মধ্যে ২৭জন বাংলাদেশি, ৮জন পাকিস্তানী, ৫জন সিরিয়ার ও ৪জন মিসরের।

দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়ার একটি প্রতিনিধি দল তিউনিসিয়ার জারবা ও গ্যাবেস হাসপাতালের মর্গে অজ্ঞাত পরিচয়ে সংরক্ষিত সকল মৃতদেহ পরিদর্শন করেন। এরপর বর্ণিত দুর্ঘটনায় জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের সহায়তায় মৃত ৮জন বাংলাদেশি নাগরিকের ছবি এবং প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। পরবর্তীতে দূতাবাস হতে নিহত বাংলাদেশিদের অনুকূলে ট্রাভেল পারমিট (আউটপাস) ইস্যু করে মৃতদেহগুলো দেশে প্রেরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে দূতাবাস হতে তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষের সাথে নিরলসভাবে কাজ করে পর্যায়ক্রমে মৃতদেহ সমূহের সুরতহাল, মৃত্যু সনদ এবং মেডিকেল সার্টিফিকেট ইস্যুসহ অন্যান্য সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।

দূতাবাসের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর মৃত্যুবরণকারী ৮জন বাাংলাদেশি নাগরিকের মৃতদেহ দেশে প্রেরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। সকল কার্যক্রম সম্পন্নের পর ৩০ এপ্রিল মৃতদেহগুলো দেশে প্রেরণের জন্য তিউনিসিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এসময় তিউনিসিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মাদ খায়রুল বাশার এবং দূতাবাসের মিনিস্টার (শ্রম) গাজী মো: আসাদুজ্জামান কবির উপস্থিত ছিলেন। মৃতদেহগুলো সৌদি এয়ারলাইনসের ৮০৮ ফ্লাইটে বৃহস্পতিবার (২মে) দুপুরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় বলে ঢাকায় অবস্থানরত নিহত মামুনের বড় ভাই সজিব শেখ জানান। মৃতদেহগুলো দেশে প্রেরণের জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় হতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়ার পর দূতাবাসের পক্ষে মৃতদেহগুলো দেশে প্রেরণ করা সম্ভব হয়েছে।

Comments

comments

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply




উন্নয়ন সহযোগীতায়ঃ- সেভেন ইনফো টেক